খ্রীষ্টিয়ান ডিসাইপলশীপ সেন্টার (সিডিসি) ১৯৭৯ সালে ভারতীয় মিশনারী বিশ্বনাথ আচার্য্য চৌধূরী ও মিসেস বিজয়মালা চৌধূরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। মিঃ বিশ্বনাথ চৌধূরী একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ১৯৬৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষাগারে কর্মরত অবস্থায় গ্যাস বিস্ফরণে মারাত্মক দূর্ঘটনায় পতিত হন ফলশ্রুতিতে তার শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ অবশ হয়ে যায়। মুম্বায়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় গিদিয়ন বাইবেলের নতুন নিয়ম পড়ার সুযোগ পান যার মাধ্যমে তিনি যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে নতুন জীবন লাভ করেন। একজন হিন্দু ব্রাহ্মণ বিশ্বনাথ (বিষু) খ্রীষ্টিয়ান হন।

ভারতে ও অষ্ট্রেলিয়ায় দীর্ঘ চিকিৎসার পরে অবশেষে তিনি একজন হুইল চেয়ার প্রতিবন্ধী রূপে পুনর্বাসিত হন। ১৯৭৪ সালে অষ্ট্রেলিয়ায় মিশনারী প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি এবং তার সহধর্মিনী বিজয়মালা চৌধূরী বাংলাদেশে আসেন। একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী হিসেবে গ্রামে গিয়ে মানুষদের সেবাদান করা তার পক্ষে সম্ভবপর ছিল না যে গ্রামে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বাস করেন তবে প্রথম থেকেই একটি ‘খ্রীষ্টিয় কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করার প্রবল আকাঙ্খা ও দর্শন ছিল তার মধ্যে যে কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি গ্রামের মানুষের কাছে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার তুলে ধরতে সক্ষম হবেন। তার শারিরীক প্রতিবন্ধকতার জন্য গ্রামে যেতে না পারলেও তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে গ্রামের লোকজন তার প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রে এসে প্রভুর পরিচর্য্যা কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। সেই লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে খ্রীষ্টিয়ান ডিসাইপলশীপ সেন্টার (সিডিসি) প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ‘খ্রীষ্টিয় মানব-সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র’ হিসেবে যথেষ্ট পরিচিতি লাভ করেছে যার মধ্য দিয়ে সুবিধা-বঞ্চিত গ্রামীন জনপদে খ্রীষ্টিয় ঈশতাত্বিক প্রশিক্ষণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার আলো বিস্তার করছে যেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের আত্মিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থানকে আরো উন্নত ও মজবুত করার সংগ্রামে নিজেদেরকে উপযুক্ত ভাবে সম্পৃক্ত করতে পারেন যাতে তারা জাতীয় জীবনে আত্ম-মর্যাদার সাথে খ্রীষ্টিয় সাক্ষ্য বহনে যথেষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম হন।